হাউজিং লোন: আপনার স্বপ্নের বাড়ি তৈরির সঠিক সমাধান
নগরীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা জনাব আরিফ হোসেন। বহুদিন যাবৎ বুকে স্বপ্ন ধারন করে ছিলেন ঢাকার বুকে এক টুকরো জমিতে নিজের স্বপ্নের বাড়ি গড়ে তুলবেন। তার এই স্বপ্নপূরণে বাঁধা হয়ে দাড়ায় উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, যার ফলে বাড়ি তৈরির পর্যাপ্ত পরিমান মূলধন জোগাতে গিয়ে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছিলো। এমতাবস্থায় আরিফ সাহেবের কাছের এক বন্ধু তাকে হাউজিং লোন অথবা হোম লোন সুবিধা গ্রহণ করার পরামর্শ দেন। বর্তমানে হাউজিং লোন সুবিধা গ্রহন করে আরিফ হোসেন তার স্বপ্নের বাড়ি নির্মাণে সফল।
জীবনের পথচলায় প্রায় সকল মানুষেরই লক্ষ্য থাকে, স্বপ্নের একটি বাড়ি ক্রয় অথবা তৈরি করার। ব্যক্তিগত সাফল্যের মাইলফলক, এবং পরিবারের জন্য একটি স্থায়ী আশ্রয় নিশ্চিত করতে সকলেই একটি নিজস্ব বাড়ির মালিক হতে চান। তবে এই স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাড়ায় টাকার অংকের পরিমাণ। একটি বাড়ি ক্রয় অথবা নির্মাণ করার জন্য এককালীন মেয়াদেই বড় অংকের একটি মূলধন প্রয়োজন পড়ে যা অনেকের পক্ষেই এককালীন ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় না। এছাড়াও উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও জমির দামের ঊর্ধ্বগতিও বাঁধা হয়ে দাড়ায়।
বর্তমান সময়ের উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বাড়ির দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে নগদ অর্থ দিয়ে বাড়ি কেনা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। তবে,এই পরিস্থিতির একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে হাউজিং লোন অথবা গৃহ নির্মাণ ঋণ, যা আপনাকে সহজেই আপনার স্বপ্নের বাড়ি কেনার সুযোগ প্রদান করবে।
আজকের ব্লগে আমরা হাউজিং লোনের বিভিন্ন দিক, এর সুবিধা, এবং কিভাবে গ্রাহকগণ গৃহ নির্মাণ ঋণ তথা হাউজিং লোন সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব-
হাউজিং লোন-
চলুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক হাউজিং লোন বলতে মূলত কি বুঝায়। যদি খুব সহজ ভাষায় বলা হয় তাহলে, হাউজিং লোন হচ্ছে একটি অর্থনৈতিক ঋণ যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া হয় বাড়ি কেনা অথবা তৈরি করার জন্য।
হাউজিং লোন বিষয়টি অনেকের কাছে হোম লোন বা গৃহ নির্মাণ ঋণ হিসেবেও পরিচিত। এই ঋণ সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী হয় এবং গ্রাহককে ধাপে ধাপে কিস্তি হিসেবে শোধ করতে হয়। হাউজিং লোনের সাহায্যে গ্রাহক সহজেই বাড়ির ক্রয়মূল্য প্রদান করতে পারেন এবং ধীরে ধীরে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন, যার ফলে এককালীন মেয়াদে একটি বড় অংকের মূলধন ব্যবস্থা করার দুশ্চিন্তা পোহাতে হয় না।
হাউজিং লোনের বিভিন্ন ধরনঃ
ঋণগ্রহীতার বিভিন্ন প্রয়োজন মেটাতে বাজারে বিভিন্ন ধরণের হোম লোন পাওয়া যায়। প্রচলিত ধরনের মধ্যে কিছু সুপরিচিত লোন নিয়ে আলোচনা করা যাকঃ
- হোম পারচেজ লোনঃ একটি নতুন বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় কিংবা নির্মাণের জন্য সবচেয়ে সাধারণ ধরণের হোম লোন ঋণগ্রহীতা গণ নিয়ে থাকেন সেটি হচ্ছে হোম পারচেজ লোন।
- হোম ইমপ্রুভমেন্ট লোনঃ এই ধরনের লোন সাধারনত বিদ্য়মান বাড়ি সংস্কার অথবা বাড়ি উন্নয়ন কাজ সম্পাদনের জন্য নেওয়া হয়ে থাকে।
- হোম এক্সটেনশন লোনঃ গ্রাহকগণ যখন তাদের বাড়ি প্রসারিত করতে চান (যেমন একটি নতুন ঘর সংযুক্ত করা বা নতুন একটি উইং তৈরি করা) তখন এই লোন সুবিধাটি গ্রহণ করে থাকেন।
- ল্যান্ড পারচেজ লোনঃ ভবিষ্যৎ এর কথা মাথায় রেখে বিনিয়োগ হিসেবে জমি ক্রয় বা ভবিষ্যতে বাড়ি তৈরি করার জন্য গ্রাহকগণের জন্য এই লোন সুবিধাটি প্রদান করা হয়.
ল্যান্ড, অ্যাপার্টমেন্ট কিংবা গোটা ভবন, যেটাই হোক না কেন প্রোপার্টি ক্রয় অথবা নির্মাণ মানেই বড় অংকের একটি আর্থিক বিনিয়োগ। আর এই ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে হোম লোন। বিষয়টি এমন নয় যে, যারা অর্থের সংকুলান করতে পারছেন না, কেবলমাত্র তারাই হাউজিং লোন নিতে ইচ্ছুক। যাদের নিজেদের অর্থায়ন এর সামর্থ্য রয়েছে, তারাও হাউজিং লোন নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কেননা, একবারে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করার চেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের কিস্তিতে লোন পরিশোধ করতেই অনেকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং এর ফলে লোন গ্রহীতাকে খুব বেশি চাপও নিতে হয় না।
হাউজিং লোনের সুবিধাসমূহ-
- দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধাঃ হাউজিং লোন বা হোম লোন সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয়। এতে মাসিক কিস্তির পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম হয়ে থাকে, যা ঋণগ্রহীতার উপর চাপ কমায়।
- নিম্ন সুদের হারঃ অন্যান্য লোনের তুলনায় ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হাউজিং লোনের ক্ষেত্রে নিম্ন সুদের হার প্রদান করে থাকে। সুদের হার কম হওয়ার কারণে আপনি দীর্ঘমেয়াদে ঋণ পরিশোধ করার সহায়তা ভোগ করতে পারবেন এবং আপনার মাসিক কিস্তির চাপ হ্রাস পাবে।
- সম্পদের নিরাপত্তাঃ হাউজিং লোনের মাধ্যমে ক্রয় করা বাড়ি আপনার স্থায়ী সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি আপনার সম্পদ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং ভবিষ্যতে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।
- কর সুবিধাঃ হাউজিং লোনের সুদের ওপর কর ছাড় পাওয়া যায়। এটি আপনাকে আপনার বার্ষিক আয়কর হ্রাস করতে সহায়তা করবে যার ফলে আপনি আর্থিক ভাবে সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।
- স্বল্প ডাউন পেমেন্টঃ হাউজিং লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে ডাউন পেমেন্ট তুলনামুলুক ভাবে কম হয়। হাউজিং লোনের সুবিধা নেওয়ার জন্য সাধারণত সম্পূর্ণ টাকার ১০% থেকে ২০% ডাউন পেমেন্ট দিতে হয়। বাকি টাকা ব্যাংক ঋণ হিসেবে দেয়।
- পুনঃবিনিয়োগের সুযোগঃ হাউজিং লোন নিয়ে বাড়ি ক্রয় বা বাড়ি তৈরির পর, সেই সম্পত্তি পুনঃবিনিয়োগ করে লাভবান হওয়ার সুযোগও রয়েছে। আপনার তৈরিকৃত বাড়ি অথবা ক্রয়কৃত বাড়ি আপনি ভাড়া প্রদান করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ থাকে অথবা আপনি চাইলে সম্পত্তি বিক্রিও করতে পারবেন।
আপনি যখনই একটি লোন গ্রহণ করবেন, সেই লোন এর নানাবিধ সুবিধা যেমন আপনি ভোগ করতে পারবেন ঠিক তেমনি ভাবে কিছু অসুবিধার কথাও আপনাকে বিবেচনায় আনতে হবে। অন্য সব লোনের মতো নানাবিধ সুবিধার পাশাপাশি হাউজিং লোনের ও কিছু অসুবিধার দিক রয়েছে। আপনাদের জানার সুবিধার্থে আমরা হাউজিং লোনের অসুবিধা গুলোও সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করবোঃ
হাউজিং লোনের একটি প্রধান অসুবিধা হচ্ছে সুদের হার পরিবর্তন। যদি আপনি ফ্লোটিং সুদ হারের ভিত্তিতে লোন গ্রহণ করেন, সেক্ষেত্রে সুদের হার বাড়লে EMI বেড়ে যেতে পারে, যা আপনার আর্থিক চাপ বাড়াতে পারে। আবার, এই লোনের আরেকটি অসুবিধা হচ্ছে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী দায়। হাউজিং লোনের মেয়াদ সাধারণত ১৫-৩০ বছর পর্যন্ত হয়, যার ফলে আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে ঋণের দায় বহন করতে হবে। এছাড়াও ডাউন পেমেন্ট এর উচ্চ হার সহ বিভিন্ন লুকানো ফি (প্রসেসিং ফি, প্রিপেমেন্ট চার্জ ইত্যাদি) কারণে বাড়তি কিছু খরচ আপনাকে বহন করতে হতে পারে।
তবে সকল দিক বিবেচনায় আনলে হাউজিং লোন এর অসুবিধার তুলনায় সুবিধা গুলোই বেশি প্রাধান্য পাওয়ার যোগ্য। সঠিক ভাবে যদি আপনি লোন নিতে পারেন তবে দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হতে পারবেন।
আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কিভাবে হাউজিং লোন এর সুবিধা নিতে পারবেন বা কোন কোন ধাপ অবলম্বন করে বাড়ি তৈরি বা কিনার জন্য একটি লোন নেওয়া যায়। চলুন তবে হাউজিং লোন নেওয়ার ধাপ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
(ধাপ ০১) আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচনঃ লোন নেওয়ার জন্য সর্বপ্রথম যে কাজটি আপনাকে করতে হবে সেটি হচ্ছে সঠিক একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা। বিভিন্ন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদের হার, শর্তাবলী এবং প্রসেসিং ফি যাচাই করে প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে।
(ধাপ ০২) লোনের যোগ্যতা যাচাইঃ প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো যাচাই করে প্রাথমিক ভাবে নিরবাচিত সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে আপনার আয়, ক্রেডিট স্কোর, আপনার সম্পদের পরিমাণ তুলনা করে লোন নেওয়ার যোগ্যতা যাচাই করতে হবে এবং যাচাই করার পর যে প্রতিষ্ঠান আপনার জন্য উত্তম সেটি নির্বাচন করে নিবেন।
(ধাপ ০৩) আবেদন ফর্ম পূরণঃ যোগ্যতা বাছাই করার পর যদি আপনি লোন গ্রহন করার উপযুক্ত হন তবে যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নিবেন সেখান থেকে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করে তা পূরণ করতে হবে। উক্ত ফর্মে এতে আপনার ব্যক্তিগত, আর্থিক এবং সম্পত্তির বিবরণসহ আরও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য উল্লেখ করতে হবে।
(ধাপ ০৪) প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা: এই ধাপে আপনাকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যে সকল কাগজপত্র জমা দিতে বলবে সেগুলো জমা দিতে হবে। কি কি ধরনের কাগজপত্র জমা দিতে হতে পারে তার একটি ধারনা নিচে তুলে ধরা হলোঃ
ব্যক্তিগত কাগজপত্র:
- জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- ইলেকট্রিসিটি বিল বা গ্যাস বিল।
আর্থিক কাগজপত্র:
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- আয়-উৎসের প্রমাণপত্র
- আয়কর রিটার্নের ফটোকপি (যদি প্রযোজ্য হয়)।
সম্পত্তি সংক্রান্ত কাগজপত্র:
- জমির দলিলের ফটোকপি।
- জমির পরিমাপের সার্টিফিকেট।
- বিক্রেতার সাথে চুক্তিপত্রের কপি (বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে)।
অন্যান্য কাগজপত্র:
- ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য কাগজপত্র (যদি থাকে)।
(ধাপ ০৫) লোন মূল্যায়ন ও অনুমোদন: আপনি প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেগুলো যাচাই বাছাই করে লোন মূল্যায়ন করবে। যদি সবকিছু সঠিক এবং ব্যাংকের শর্তানুযায়ী হয়, তবে আপনার লোন অনুমোদন করা হবে।
(ধাপ ০৬) লোন বিতরণ: অনুমোদিত লোনের অর্থ সংগ্রহ করার জন্য সবশেষে আপনাকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে এবং চুক্তি স্বাক্ষর করার পর আপনি বাড়ি তৈরি বা কেনার জন্য লোনের অর্থ উত্তলন করতে পারবেন।
এখন আমরা আলোচনা করবো কোন কোন প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি হাউজিং লোন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। আমাদের দেশে হাউজিং বা হোম লোন পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বিভিন্ন সুবিধা এবং নমনীয় শর্তাবলী দিয়ে ঋণ প্রদান করে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যাদের থেকে আপনারা হাউজিং লোন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেনঃ
১. বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন (BHBFC)- বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন হলো সরকারি মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান যা বিশেষ করে আবাসন খাতে ঋণ প্রদান করে। এরা কম সুদের হার এবং দীর্ঘমেয়াদী ঋণ প্রদানের সুযোগ প্রদান করে। এটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে।
সুবিধা:
- দীর্ঘমেয়াদী ঋণ (১৫-২০ বছর পর্যন্ত)
- নিম্ন সুদের হার
- কিস্তির সুবিধা
২. ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (DBBL)- ডাচ-বাংলা ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের হাউজিং লোন প্রদান করে থাকে। ব্যাংকটি সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং গ্রাহকদের আর্থিক সক্ষমতার উপর ভিত্তি করে লোনের পরিমাণ নির্ধারণ করে।
সুবিধা:
- আকর্ষণীয় সুদের হারঃ ৮-৯% (পরিবর্তনশীল)
- সর্বোচ্চ লোন সময়কাল: ২০ বছর পর্যন্ত
- লোন প্রক্রিয়াকরণ ফিঃ ০.৫% থেকে ১% পর্যন্ত
- ফ্লেক্সিবল রেপেমেন্ট অপশন
৩. ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড- ব্র্যাক ব্যাংক হোম লোনের ক্ষেত্রে দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ এবং ফ্লেক্সিবল কিস্তির সুবিধা দিয়ে থাকে। এটি একটি জনপ্রিয় পছন্দ, বিশেষ করে মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য।
সুবিধা:
- সুদের হার: ৯-১০% (প্রথম দুই বছর)
- সর্বোচ্চ লোন সময়কাল: ২৫ বছর পর্যন্ত
- সহজ প্রক্রিয়াকরণ এবং ডকুমেন্টেশন
৪. মিডল্যান্ড ব্যাংক- মিডল্যান্ড ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যাক্তি-মালিকানায় গঠিত একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। যার যাত্রা শুরু হয় ১৩ জুন ২০১৩ সালে। যাত্রাকাল অল্প হলেও, ব্যাংকিং কার্যক্রমে সবার মধ্য থেকে ছাপিয়ে উঠেছে। এটির ব্যাংকিং কার্যক্রমের মধ্যে হোম লোন প্রদান অন্যতম।
সুবিধা:
- লোনের মেয়াদকালঃ ৩-২০ বছর
- দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি
- আংশিক এবং সম্পূর্ণ সেটেলমেন্ট সুবিধা
৫. স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড তাদের গ্রাহকদের জন্য হোম লোনের মাধ্যমে উন্নত সেবা প্রদান করে। যদিও এই ব্যাংকের সুদের হার কিছুটা বেশি হতে পারে, তবে তাদের বিশ্বমানের সেবা এবং গ্রাহক সহায়তা ব্যবস্থা ভালো।
সুবিধা:
- ২৫ বছর পর্যন্ত ঋণের মেয়াদ
- প্রপার্টি ইন্সুরেন্স সুবিধা
- দ্রুত লোন অনুমোদন প্রক্রিয়া
৬. লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড- লঙ্কাবাংলা ব্যাংক যৌথ মালিকানাধীন একটা বহজাতিক কোম্পানি। যার যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৭ সালে কোম্পানি আইন-১৯৯৩ এর অধীনে। লঙ্কাবাংলা ব্যাংক বাংলাদেশে হোম লোনের জন্য সেরা কিছু ব্যাংকের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সুবিধা:
- সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন সুবিধা
- লোনের মেয়াদকালঃ ২৫ বছর।
- অতি দ্রুত লোন প্রাপ্তি এবং কাগজপত্রের বৈধতা নিরুপন।
এছাড়াও আরও নানা আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে যারা বিভিন্ন নীতিমালা অনুসরণ করে হাউজিং লোন প্রদান করে থাকে।
প্রত্যেকটা লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বেসিক বিষয় থাকে যা আপনাকে যাচাই বাছাই করে এরপর লোন নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিছু তথ্য বিচার বিশ্লেষণ করে আপনাকে লোন নেওয়ার কথা ভাবতে হবে। ঠিক তেমনি ভাবে হাউজিং লোন নেওয়ার ক্ষেত্রেও আপনাকে অবশ্যই কিছু দিক বিবেচনায় নিতে হবে। হাউজিং লোন বা হোম লোন নেওয়ার সময়কার বিবেচ্য বিষয়গুলো হলোঃ
- সুদের হার এবং অন্যান্য চার্জ
- লোনের মেয়াদকাল
- মাসিক কিস্তির পরিমাণ
- লোন নেওয়ার শর্তাবলী এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি